
প্রেমের টানে ধর্মান্তর, অবশেষে হোম-যজ্ঞ করে সন্তানদের নিয়ে স্বধর্মে ফিরলেন মৌসুমী
বারাসত, নিজস্ব সংবাদদাতা:
প্রেমের টানে ধর্ম পরিবর্তন করে সংসার পেতেছিলেন। নাম বদলে হয়েছিলেন ফাতিমা। কিন্তু সেই সংসারের স্বপ্ন ভাঙতে সময় লাগেনি। দীর্ঘ মানসিক ও শারীরিক লাঞ্ছনার পর অবশেষে আইনি প্রক্রিয়া মেনে এবং সনাতন রীতিতে যজ্ঞের মাধ্যমে ফের নিজের ধর্মে ফিরে এলেন মৌসুমী কুম্ভকার। সঙ্গে ফিরল তাঁর এক পুত্র ও এক কন্যা। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতে। হিন্দু সংহতির বিশিষ্ট নেতা অজিত অধিকারীর উদ্যোগে এই ‘ঘর ওয়াপসি’ সম্পন্ন হয়।
জানা গিয়েছে, মৌসুমী কুম্ভকার চৈতন্য চন্দ্র কুম্ভকারের মেয়ে। বছর কয়েক আগে শামসুল হকের ছেলে রাজু আহমেদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। প্রেমের টানেই নিজেকে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেন। নিজের নাম পরিবর্তন করে রাখেন ফাতিমা বেগম। ২০১৪ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি মুসলিম বিবাহ আইন (Muslim Marriage Act) মেনে ২১ হাজার ৭৮৬ টাকা দেনমোহরে তাঁদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। পরবর্তীতে সরকারি নথিপত্রেও মৌসুমী নিজের নাম নথিভুক্ত করেন ‘মৌসুমী ফতেমা আহমেদ’ হিসেবে।
বিয়ের পর এক পুত্র ও এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন মৌসুমী। কিন্তু অভিযোগ, এরপর থেকেই তাঁর ওপর শুরু হয় অকথ্য অত্যাচার। মৌসুমীর দাবি, সংসারে তিনি সম্মান বা স্ত্রীর মর্যাদা পাননি, বরং তাঁকে অনেকটা ‘গনিমতের সম্পত্তি’র মতো ব্যবহার করা হতো। দিনের পর দিন এই লাঞ্ছনা সহ্য করতে না পেরে তিনি পুনরায় হিন্দু ধর্মে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন।
বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি সনাতন ধর্মে ফেরার চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু সঠিক পথ ও আইনি সহায়তার অভাবে তা সম্ভব হচ্ছিল না। অবশেষে পরিচিত এক ব্যক্তির মাধ্যমে তাঁর যোগাযোগ হয় হিন্দু সংহতির বিশিষ্ট নেতা তথা বনগাঁর বাসিন্দা অজিত অধিকারীর সঙ্গে।
অজিতবাবু মৌসুমীর অসহায়তার কথা শুনে এগিয়ে আসেন এবং তাঁকে সঠিক আইনি পরামর্শ দেন। তাঁর উদ্যোগেই সম্পূর্ণ আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। এরপর বারাসতের শতদল মাঠে আয়োজিত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে হোম-যজ্ঞের মাধ্যমে শুদ্ধিকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। অগ্নিসাক্ষী রেখে বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে মৌসুমী এবং তাঁর দুই সন্তান পুনরায় সনাতন হিন্দু সমাজের মূল স্রোতে ফিরে আসেন।
সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আইনি ও ধর্মীয়—উভয় পথ মেনেই এই প্রত্যাবর্তন সম্পন্ন হয়েছে। দীর্ঘ যন্ত্রণার অবসান ঘটিয়ে নিজের শিকড়ে ফিরতে পেরে আপ্লুত মৌসুমী।