

ফরিদপুরে ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে আকাশ মন্ডল নামে ১৯ বছর বয়সী এক হিন্দু যুবক গ্রেপ্তার!
নিজস্ব প্রতিবেদক :
ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলায় ফেসবুকে পবিত্র কাবা শরিফকে অবমাননাকর একটি ছবি স্টোরিতে পোস্ট করার অভিযোগে সাগর মণ্ডল নামে ১৯ বছর বয়সী এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার বিকেলে ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই পুরো এলাকায় টানটান উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। শাকরাইল গ্রামে বসবাসরত সাগর মণ্ডলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে তিনি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে আপত্তিকর একটি ছবি শেয়ার করেছিলেন, যা মুহূর্তেই স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে দেয়।
স্টোরিটি প্রকাশ হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই খবরটি আশপাশের কয়েকটি গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যার দিকে গোড়াইল বাজার এলাকায় শত শত মানুষ জড়ো হয়ে প্রতিবাদ শুরু করেন। পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ জনতা সাগর মণ্ডলকে আরিফ ডাক্তারের ফার্মেসির ভেতরে আটকে রাখেন। জানা যায়, সাগর সেই ফার্মেসিতে সহকারী কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন এবং ঘটনার সময় সেখানেই অবস্থান করছিলেন। বিক্ষুব্ধদের ক্ষোভ বাড়তে থাকায় ঘটনাস্থলে তীব্র চাপ সৃষ্টি হয়।
খবর পেয়ে দ্রুত সেখানে পৌঁছায় উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তারা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দবির উদ্দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে মানুষের সাথে কথা বলেন এবং জানান যে সরকার ও প্রশাসন যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেবে। তিনি সবাইকে উত্তেজনা পরিহার করে শান্ত থাকার আহ্বান জানান। তার আশ্বাসে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
এদিকে থানা পুলিশ সাগর মণ্ডলকে নিজেদের হেফাজতে নেয় এবং তাকে নিরাপদে থানায় নিয়ে যায়। গ্রেপ্তার সাগরের বাড়ি উপজেলার লস্করদিয়া ইউনিয়নের শাকরাইল গ্রামে, তার বাবার নাম শ্রীকান্ত মণ্ডল। ঘটনার পর থেকেই ওই গ্রামসহ আশপাশের এলাকায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। স্থানীয়দের মধ্যে এখনো চাপা উত্তেজনা থাকায় অতিরিক্ত টহল জোরদার করা হয়েছে।
নগরকান্দা থানা পুলিশের কর্মকর্তারা জানান যে অভিযোগটি অত্যন্ত সংবেদনশীল হওয়ায় বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। আইনের বিধান অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ধর্মীয় অনুভূতিকে কেন্দ্র করে যেন কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, সেজন্য পুরো এলাকায় কঠোর নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।